চলতি বছরে ইউরোপের বাইরের দেশগুলো থেকে মোট ৮৯,২৯০ জন অভিবাসী কর্মী আনার অনুমোদন দিয়েছে গ্রিসের মন্ত্রিসভা। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে চার হাজার কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সম্প্রতি একটি সরকারি গ্যাজেট প্রকাশিত হয়েছে।
গ্রিসের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণের জন্য অভিবাসী কর্মীদের কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোটা অনুযায়ী, গ্রিক নিয়োগকর্তারা এই সংখ্যার বেশি কর্মী আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন না। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের শেষদিকে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
গ্রিসে কর্মী ঘাটতি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর পরিবর্তন
গ্রিসে কর্মী ঘাটতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো বিদেশি কর্মীদের আনার প্রক্রিয়া দ্রুত ও সহজ করার উদ্যোগ নিচ্ছে। বর্তমানে দেশটির কৃষি, পর্যটন, এবং নির্মাণ খাতে গুরুতর কর্মী সংকট চলছে।
গ্যাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, মোট ৮৯,২৯০ জন অভিবাসী কর্মীর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি কোটা অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ। কৃষি শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, মেশিন অপারেটর, কারখানার কর্মী এবং অফিস কর্মীদের জন্য এই কোটার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সিজনাল ভিসা
মোট কোটার মধ্যে ৪৫,৬৭০ পদ মৌসুমী কাজ বা সিজনাল ভিসার জন্য নির্ধারিত হয়েছে।
- এই পদগুলো কৃষি ও পর্যটন খাতে মৌসুমী শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ।
- উচ্চ দক্ষ কর্মসংস্থানের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ২,০০০ পদ।
- নির্ভরশীল কর্মসংস্থান বা স্পন্সর ভিসার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৪১,৬২০ জনের সুযোগ।
বাংলাদেশি ও মিশরীয় কর্মীদের জন্য বিশেষ কোটা
গ্রিসের গ্যাজেট অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও মিশরের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় প্রায় ৯,০০০ কর্মী আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে চার হাজার কর্মীকে কৃষি, বন, মৎস্য এবং পর্যটন খাতে নিযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগ ২০২২ সালে বাংলাদেশ ও গ্রিসের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
অন্যদিকে, গ্রিসের কৃষি খাতে মিশর থেকে পাঁচ হাজার মৌসুমী কর্মী আনা হবে। মিশরের সঙ্গে এই চুক্তি ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হয়েছে।
এছাড়াও, গ্রিসে মোট পাঁচ হাজার অফিস কর্মীকে ভিসার সুযোগ দেওয়া হবে। এদের মূলত এমন কোম্পানিতে নিয়োগ করা হবে, যারা স্থানীয় এবং বিদেশি কোম্পানির শাখা হিসেবে কাজ করে। এসব কর্মী পণ্যের প্রচার এবং কারিগরি সহায়তা প্রদানের কাজ করবে।
নিয়মিতকরণের সুবিধা
বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য গ্রিসে নিয়মিতকরণের সুবিধাও চালু রয়েছে।
- ২০২৩ সালে ৩,৪০৫ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি কর্মীকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।
- ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনিয়মিত কর্মীদের নিয়মিত হওয়ার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া চালু ছিল।
গ্রিসের নতুন ভিসা নীতি বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মীদের জন্য একটি বড় সুযোগ। এই উদ্যোগ দেশের অভিবাসী কর্মসংস্থান খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।
তথ্যসূত্রঃ ইনফোমাইগ্রেন্টস