ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশী ও আশ্রয়প্রার্থীদের স্রোত ঠেকাতে সমঝোতায় পৌঁছেছে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭টি দেশ।
বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইইউর সদর দপ্তরে ২৭ রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা এ বিষয়ক একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইতালি, স্পেন, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে অভিবাসনপ্রত্যাশী ও আশ্রয়প্রার্থীদের যে ঢল শুরু হয়েছে, তা ঠেকাতে সেসব ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান নির্বাহী সংস্থা ইউরোপীয় কমিশন জোটের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে। আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হবে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী ও ঢল থামাতে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করবে।
ইইউর প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান নির্বাহী উরসুলা ভন ডার লেন চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বুধবার এক এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত যে অবশেষে অভিবাসনপ্রত্যাশী ও আশ্রয়প্রার্থী ইস্যুতে শেষ পর্যন্ত আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছি। বুধবার সাক্ষরিত এই চুক্তির বদৌলতে আমরা এখন ইউরোপে এ সংক্রান্ত কার্যকর ও বাস্তবমুখী আইন প্রণয়ন ও বাস্তবানের জন্য ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, ইউরোপীয় কাউন্সিল ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারব।’
‘বর্তমানে অভিবাসনসংক্রান্ত যে গোলোকধাঁধায় ইউরোপ পড়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার প্রথম পদক্ষেপ এই চুক্তি। এটি একটি সত্যিকারের গেম চেঞ্জার।’
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরে ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি, গ্রিস ও স্পেন, ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্য এবং স্থলপথে পূর্ব ইউরোপ হয়ে জার্মানি-ফ্রান্স-সুইডেনসহ বিভিন্ন দেশে ঢুকছেন এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অভিবাসন প্রত্যাশী ও আশ্রয়প্রার্থীরা। কোনো প্রকার নথিপত্র ছাড়া অবৈধভাবে প্রবেশ করা এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীদের চাপে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের।
এমনকি বর্তমানে ইউরোপজুড়ে যে উগ্র ডানপন্থী ও বর্ণবাদী দলগুলোর যে জয়জয়কার, তার জন্যও দায়ী অভিবাসনপ্রত্যাশী ও আশ্রয়প্রার্থী ইস্যুটি। কারণ পার্লামেন্টে নির্বাচনের ক্ষেত্রে অভিবাসী নিয়ন্ত্রণকে প্রধান নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে হাজির করছে ডানপন্থী দলগুলো।
আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার স্পেনের গ্রেনাডায় ইইউর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর অভিবাসনমন্ত্রীদের বৈঠক রয়েছে। ইউরোপের রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, অনুষ্ঠিতব্য সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বুধবারের চুক্তি।
Source : Dhaka Post